Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বিএলআরআই উদ্ভাবিত লাম্পি স্কিন ডিজিজ ভ্যাকসিন সিড প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নিকট হস্তান্তর


প্রকাশন তারিখ : 2025-02-11

        

বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) কর্তৃক বাস্তবায়িত “জুনোসিস এবং আন্তঃসীমান্তীয় প্রাণিরোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ গবেষণা” শীর্ষক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উদ্ভাবিত লাম্পি স্কিন ডিজিজ (LSD) ভ্যাকসিন সিড হস্তান্তর অনুষ্ঠান আজ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রি. তারিখে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল এর ক্রিস্টাল বল রুমে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বিএলআরআই কর্তৃক উদ্ভাাবিত লাম্পি স্কিন ডিজিজ (LSD) ভ্যাকসিনটি বাণিজ্যিকভিত্তিতে উৎপাদন ও খামারি পর্যায়ে সম্প্রসারণের লক্ষ্যে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নিকট আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়।

ভ্যাকসিন সিড হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। এছাড়াও সম্মানীয় অতিথি হিসেবে ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান। আর উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক।

সকালে পবিত্র গ্রন্থ হতে পাঠের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বেলা ১১.০০ ঘটিকায় অনুষ্ঠানটি শুরু্ হয়। শুরুতেই আমন্ত্রিত অতিথিদের উদ্দেশ্যে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইনস্টিটিউটের অতিরিক্ত পরিচালক ড. এ বি এম মুস্তানুর রহমান। এরপর ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের পটভূমি, ভ্যাকসিন উদ্ভাবন প্রক্রিয়া, উদ্ভাবিত ভ্যাকসিনের ব্যবহার বিধি ও গুরুত্ব ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএলআরআই এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ট্রান্সবাউন্ডারি এ্যানিমেল ডিজিজ রিসার্চ সেন্টারের দপ্তর প্রধান ড. মুহাম্মদ আবদুস সামাদ। এসময় উদ্ভাবিত ভ্যাকসিনের উপরে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্রও প্রদর্শন করা হয়।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের পরে অনুষ্ঠিত হয় বিশেষজ্ঞ আলোচনা। এসময় আলোচনা করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ এর ভেটেরিনারি অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. মো. বাহানুর রহমান এবং বাংলাদেশ সিস্টেমস স্ট্রেন্থেনিং ফর ওয়ান হেলথ এর চীফ অফ পার্টি ও চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. নিতীশ চন্দ্র দেবনাথ।

বিশেষজ্ঞ আলোচনার পরে অনুষ্ঠিত হয় উন্মুক্ত আলোচনা। উন্মুক্ত আলোচনা অংশে বক্তব্য রাখেন বিএরআরআই এর সাবেক মহাপরিচালকগণ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগত অধ্যাপক ও শিক্ষকগণ এবং বিভিন্ন সংগঠন থেকে আগত প্রতিনিধিবৃন্দ। এরপর আমন্ত্রিত অতিথিরা একে একে তাদের বক্তব্য প্রদান করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যের আগে বিএলআরআই উদ্ভাবিত লাম্পি স্কিন ডিজিজ (LSD) ভ্যাকসিন সিডটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আনু্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়। এসময় ভ্যাকসিন বিষয়ক একটি দ্বিপাক্ষীয় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং ভ্যাকসিনটির প্রোডাকশন ম্যানুয়ালের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, এলএসডি ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের মাধ্যমে সার্ক অঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশের লিডারশিপ প্রমাণ করা সম্ভব হয়েছে। তবে উদ্ভাবন এবং হস্তান্তর করেই খুশি হলে চলবে না। আরও পথ আমাদের বাকি রয়েছে, সেগুলোও সঠিকভাবে অতিক্রম করতে হবে। মাঠে যাওয়ার আগে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা দেখতে হবে। মাঠ পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। সেই তথ্যের আলোকে প্রয়োজনে ভ্যাকসিনের মানোন্নয়ন করতে হবে।

এসময় তিনি আরও বলেন, ভ্যাকসিনের মান ঠিক থাকলে বিদেশেও রপ্তানি করার সম্ভব। আমাদের লক্ষ্য দেশের চাহিদা মিটিয়ে ভবিষ্যতে বিদেশে এলএসডি ভ্যাকসিন রপ্তানি করা হবে।

পাশাপাশি গবেষণার উপরে গুরুত্ব আরোপ করে তিনি আরও বলেন, গবেষণা ও উন্নয়ন (রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট) সক্ষমতা বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই। এলএসডি আমাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কতোটা ক্ষতি করছে তা খুঁজে বের করতে হবে। পাশাপাশি রোগাক্রান্ত পশু বিক্রি হচ্ছে কি না তা মনিটরিংয়ের পাশাপাশি রোগাক্রান্ত পশুর মাংস গ্রহণের কোন খারাপ প্রতিক্রিয়া আছে কি না সেটিও গবেষণা করে দেখতে হবে। নতুন নতুন রোগ আসবেই। সেগুলো মোকাবেলার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাসও তিনি ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানের সভাপতি ও বিএলআরআই এর মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক তার সমাপনী বক্তব্যে বলেন, এলএসডি একটি ভাইরাসজনিত রোগ হওয়ায় এর প্রতিকারের বিকল্প নেই। সেই ক্ষেত্রে বিএলআরআই উদ্ভাবিত ভ্যাকসিনটি কার্যকরি ভূমিকা রাখতে পারে। এই ভ্যাকসিন যেনো প্রান্তিক খামারিদের দোঁরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়, সেই লক্ষ্যে আমাদের সকলকে কাজ করতে হবে। ভ্যাকসিনের মানোন্নয়নের লক্ষ্যে যাবতীয় সকল সহযোগিতা বিএলআরআই হতে করা হবে বলেও তিনি অঙ্গীকার করেন।