বিগত ১৭ই অক্টোবর রোজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট এর বাঘাবাড়ি আঞ্চলিক কেন্দ্র শাহজাদপুর, সিরাজগঞ্জ এ এই প্রথম বার গবাদি প্রাণী ও পোল্ট্রির সার্বিক উন্নয়নের অঙ্গীকার নিয়ে বার্ষিক রিসার্চ রিভিউ ওয়ার্কশপ-২০১৭ অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত কর্মশালায় গবাদি প্রাণীর রোগ নির্ণয়, প্রাণীর জাত উন্নয়ন, গো-খাদ্যের বৈজ্ঞানিক চাষাবাদ ও সংরক্ষণ প্রক্রিয়া ইত্যাদি বিষয়ের উপর গবেষণা চিত্র উপস্থাপন করা হয়। একই সঙ্গে আগামী এক বছরের গবেষণা কর্মপরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয় । অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব নারায়ন চন্দ্র চন্দ, এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোঃ হাসিবুর রহমান স্বপন, এমপি, সিরাজগঞ্জ-৬, জনাব মোঃ আজাদ রহমান, উপজেলা চেয়ারম্যান, শাহজাদপুর, প্রফেসর ড. সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন, উপাচার্য, (সাবেক), পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ড. এ এস মাহফুজুল বারি, উপাচার্য, (সাবেক), চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএলআরআই এর মহাপরিচালক ড. তালুকদার নূরুন্নাহার।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন প্রতিষ্ঠান এর বিজ্ঞানীগণ এলাকার গবাদি প্রাণীর সার্র্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে গবেষণা করে যাচ্ছেন । তারা আরও বলেন যে, কৃষি খাতে গবেষণা করে দেশ যেভাবে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে , ঠিক তেমনিভাবে গবেষণা করে দেশের শিশুসহ পূর্ণবয়ষ্ক মানুষের সার্বিক পুষ্টির চাহিদা মেটানোর জন্য দুধ, মাংস ও ডিমের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। এ জন্য প্রতিষ্ঠানটি খামারী ও দেশের চাহিদা ভিত্তিক গবেষণা কাজ করে যাচ্ছে । কর্মশালায় আরও বক্তব্য প্রদান করেন বিএলআরআই এর অতিরিক্ত পরিচালক ড. মোঃ এরসাদুজ্জামান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেহেলী লায়লা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) ফাহমিদা হক শেলী, খামারী প্রতিনিধি আব্দুস সামাদ ফকির প্রমূখ। পরে এলাকার খামারিদের মাঝে উন্নত জাতের ঘাসের কাটিং বিতরণ করা হয়। উদ্বোধনী শেষে প্রধান অতিথিসহ সকল অতিথিবৃন্দ কেন্দ্রের বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন। বিগত ৬ বছরে এই কেন্দ্র হতে প্রায় ৬৬ লক্ষ নেপিয়ার ঘাসের কাটিং ১১৭১ জন খামারীকে প্রদান করা হয়েছে। কেন্দ্রের প্রাণিপুষ্টি গবেষণাগারে ৩৮০ টি খাদ্য নমুনা ও প্রাণিস্বাস্থ্য গবেষণাগারে গোবর, দুধ, প্রস্রাব ও রক্তসহ প্রায় ৫ হাজার নমুনা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গাভীর রিপিট ব্রিডিং সমস্যার সম্ভাব্য প্রতিরোধ, এফ.এম.ডি নিয়ন্ত্রণ গ্রাম প্রতিষ্ঠা, ফডার জার্মপ্লাজম সংরক্ষণ ও গাভীর ওলান ফোলা রোগের প্রতিরোধ বিষয়ক গবেষণা কার্যক্রমের অগ্রগতি সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে কারিগরী অধিবেশনে মোট ১০ টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়। এতে দুইটি প্রবন্ধে গত বিশ বছরের কেন্দ্রের অর্জিত সাফল্য তুলে ধরা হয় এবং বাকী ৮ টি প্রবন্ধে প্রাণীর কৌলিতত্ত্ব, প্রাণিপুষ্টি এবং প্রাণিস্বাস্থ্য বিষয়ক বিগত এক বছরে বাস্তবায়িত গবেষণা কার্যক্রমের ফলাফল উপস্থাপনা করা হয়। কারিগরি সভায় চেয়ারম্যান এর দায়িত্ব পালন করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন এবং কো-চেয়ার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেড এর উপমহাব্যবস্থাপক ডা. এএফএস ইদ্দ্রিস। অংশগ্রহণকারী বিশেষজ্ঞ মন্ডলীল মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, মিল্কভিটা, বেঙ্গলমিট ও বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং সদর দপ্তর থেকে আগত বিভিন্ন পর্যায়ের বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানীবৃন্দ। বিশেষজ্ঞ প্যানেলের বিচারে ১০ জন উপস্থাপকের মধ্যে শ্রেষ্ঠ উপস্থাপক হিসাবে জনাব মোঃ রেজওয়ানুল হাবিবকে শ্রেষ্ঠ উপস্থাপক হিসেবে নির্বাচিত করা হয় এবং ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়। সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বিএলআরআই এর মহাপরিচালক মহোদয় কেন্দ্রের বিজ্ঞানী ও আগত বিশেষজ্ঞদের প্রণীত ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা অনুমোদন করেন।