মেধাবী জাতি গড়তে হলে প্রাণিজ আমিষের বিকল্প নেই আর এ জন্য গবেষণা কার্যক্রমকে আরো জোরদার করতে হবে। জাতীয় প্রয়োজনে নব নব প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) কর্তৃক আয়োজিত দুই দিন ব্যাপী ‘‘বার্ষিক রিসার্চ রিভিউ ওয়ার্কশপ-২০১৭’’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জনাব নারায়ন চন্দ্র চন্দ, এম পি, এ কথা বলেন।
মন্ত্রী আরো বলেন দেশের অধিকাংশ মানুষ কৃষি ও প্রাণিসম্পদের উপর নির্ভরশীল, এই মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে নারীর ক্ষমতায়ন, আর্থিকভাবে সাবলম্বী হচ্ছে। সরকারের ভিশন-২০২১কে সামনে রেখে গবেষণা পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। দুইদিনের এই কর্মশালার আলোকে যে, সুপারিশমালা প্রণয়ন করা হবে সেগুলি বাস্তবায়ন করার জন্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সব ধরণের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. তালুকদার নূরুন্নাহার এর সভাপতিত্বে দুই দিন ব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী অধিবেশনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মীর শওকাত আলী বাদশা, এমপি ও সভাপতি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ও ড. ভাগ্য রানী বণিক, নির্বাহী চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মীর শওকাত আলী বাদশা, বলেন দেশের প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে বিশেষ করে প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণে বিএলআরআই এর স্বল্প সংখ্যক বিজ্ঞানীগণ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীর সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি প্রতিমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
ড. ভাগ্য রানি বণিক বলেন খাদ্যে স্বয়ম্পূর্ণ হলেও প্রাণিজ আমিষের চাহিদা এখনো ঘাটতি রয়েছে। বিজ্ঞানীর স্বল্পতা নিয়ে লক্ষ্য মাত্রা অর্জন করা সম্ভাব নয়। সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে আন্ত:ইনস্টিটিউট গবেষণা কার্যক্রমের সমন্বয় থাকা একান্ত জরুরী। এ ক্ষেত্রে বিএআরসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
সভাপতির ভাষণে ড. তালুকদার নূরুন্নাহার বলেন, স্বল্প জায়গায় অধিক নিরাপদ আমিষের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে অঞ্চল ভিত্তিক সমস্যা নিরুপন করে নতুন নতুন গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে যা বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত জরুরী ও প্রয়োজনীয়। দুইদিন ব্যাপী কর্মশালায় আমরা ৫৮টি গবেষণা প্রবন্ধের মধ্যে ৩৭টি উপস্থাপন করা হবে এবং ২১টি পোস্টারের মাধ্যমে প্রদর্শিত হবে। আমরা খুবই স্বল্প সময়ের মধ্যে ৪টি প্রযুক্তি খামারি পর্যায়ে সম্প্রসারণ করার লক্ষ্যে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নিকট হস্তান্তর করবো। দুইদিন ব্যাপী কর্মশালায় দেশের পোল্ট্রি ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে অংশ গ্রহণকারিদের পরামর্শে গবেষণা কার্যক্রম আরো ফলপ্রসু হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইনস্টিটিউটের অতিরিক্ত পরিচালক জনাব মোঃ আজহারুল আমিন এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন প্রধান বৈজ্ঞানিক কমর্কর্তা ড. নাথুরাম সরকার।
দুইদিন ব্যাপী কর্মশালায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার শিক্ষক, বিজ্ঞানী ও সম্প্রসারণকর্মীসহ প্রায় ২৫০ জন অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন।